মাল্টা চাষে সফল সাতক্ষীরার নুরুল আমিন, তাকে দেখে অনুপ্রাণিত অনেকে

এখন সময়: শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:০১:০৪ এম

শাকিলা ইসলাম জুঁই, সাতক্ষীরা  : কৃষি নির্ভর একটি জেলা সাতক্ষীরা। চিংড়ি ও মিষ্টির পাশাপাশি কুল. ওল, হলুদ এবং আমের জন্য সমৃদ্ধ এ জেলায় এখন মাল্টা চাষেও বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছে কৃষকরা। আম চাষের পর এবার মালটা চাষেও সফলতার মুখ দেখছেন সাতক্ষীরার দি হাইব্রিড নার্সারী মালিক নুরুল আমিন। আশাশুনি উপজেলার বাহদুরপুরে ২০ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করে পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। তার দেখাদেখি সাতক্ষীরায় দিন দিন মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। কৃষক নুরুল আমিন কৃষিতে বরাবরের মতোই সফল একজন চাষি হিসেবে দেশব্যাপী নাম কুড়িয়েছেন। পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন গেলো তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন কৃষি কাজের সাথে। ২০০৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ২০১০ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে বৃক্ষরোপনে জাতীয় পুরষ্কার অর্জন করেন নুরুল আমিন। তার চাষ কৌশল দেখতে বিভিন্ন জায়গার সাধারণ কৃষক প্রতিনিয়তই ভিড় জমাচ্ছে মাল্টা বাগানে। 
আশাশুনির বাহদুরপুরের কৃষক নুরুল আমিনের মাল্টা ক্ষেতে যেদিকেই তাকাবেন থোকায় থোকায় ঝুলছে চির সবুজ মাল্টা। বাম্পার ফলনও হয়েছে তার গাছে। সাধারণত দুই থেকে তিন বছরেই মাল্টা গাছে পরিপূর্ণ ফল আসে। নুরুল আমিন পাইকাড়ি দরে মাল্টা বিক্রয় করছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বিঘা প্রতি লক্ষ টাকা মাল্টা বিক্রি করেছেন। এতে সে অর্থনৈতিক ভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন। তার বাগানের মাল্টার আকার এবং রঙ বেশ সুন্দর। স্বাদও চমৎকার। নুরুল-আমিনের এই সাফল্যে সাতক্ষীরার মাটিতে মালটা চাষে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। 
নুরল-আমিন জানান, আগামীতে আমের মত মাল্টা চাষেও সাতক্ষীরা সুনাম অর্জন করবে। তিনি মালটা চাষের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস ও ইউটিউব থেকে পেয়েছেন। যেকোনো ধরনের মাটিতেই মালটা চাষ করা সম্ভব। ৮-১০ ফুট দূরত্বে চারাগাছ রোপণ করতে হয়। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মাল্টা চারা  রোপণের উপযুক্ত সময়। চারার দামও কম। মাত্র ৫০-১০০ টাকায় চারা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি নিজেও চারা বিক্রি করছেন। মাল্টার পাশাপাশি বিদেশি কিছু ফলের চাষ ও চারা তৈরি শুরু করেছেন নুরুল আমিন। এর মধ্যে সূর্যডিম আম, পারসিমন, ডুরিয়ান, রামবুটান, এ্যাভো ক্যাডোসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামার বাড়ির উপ পরিচালক মোঃ নূরুল ইসলাম জানান, মাল্টা লাভ জনক একটি ফসল। জেলার মাটি ও আবহাওয়া একটু লবণাক্ত হওয়াতে সাতক্ষীরা অঞ্চলের মাল্টা খুবই মিষ্ট। এর মধ্যে বারি মাল্টা এক এর মিষ্টতা সবচেয়ে বেশি। সাতক্ষীরা জেলায় ৬১ হেক্টর জমিতে এবার মাল্টার আবাদ হয়েছে।