হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:৪৩:৪০ পিএম

শৈশব শব্দটি শুনলেই কেমন যেন একটা কল্পনার জগৎ চলে আসে চোখের পাতায়। আমাদের গ্রাম বাংলার শৈশব যেন দিনের পর দিন হারিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার নিত্যদিনের খেলাধুলাগুলো। এখন সেসব খেলার কথা মনে হলে মনে পড়ে যায় খেলার সঙ্গীদের কথা। মনে পড়ে যায় শৈশবের হারিয়ে যাওয়া খেলা আর স্মৃতির কথা। 

শিশু মানেই দৌড়ঝাঁপ, কোলাহল আর চঞ্চলতা। তারা অবসরে গ্রামের খোলা মাঠে দল বেঁধে খেলতো গ্রামীণ নানান খেলা। আর খেলাধুলার মাধ্যমে শৈশবে দুরন্তপনায় জড়িয়ে থাকতো শিশু-কিশোরেরা। কিন্তু  বর্তমান প্রজন্মের  প্রতিটি বেড়ে ওঠা সোনালি শৈশব যেন কতদিন আগেই হারিয়ে গেছে। শুধু চর্চার অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলাগুলো। তবে গ্রামীণ কৃষ্টি ও লোকজ ক্রীড়াঙ্গনের জনপ্রিয় এ খেলাগুলো পুনরুদ্ধারে নেই কোন উদ্যোগ। 

বর্তমানে নীলফামারী গ্রামীণ জনপদ থেকে প্রায় হারিয়ে গেছে ইচিং-বিচিং, হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, কানামাছি, ডাংগুলি, বৌচি, ঘুড়ি, এক্কা-দোক্কা, চড়ইভাতি, মোরগ লড়াই, ওপেন-টু-বায়োস্কোপ, দোকানপাট, দড়িলাফ, পুতুলখেলা, চোর-পুলিশ, কুতকুত, লাটিম, মার্বেল, দারিয়াবান্ধা, এলাটিং-বেলাটিং, রুমাল চুরি, লাঠিখেলা, লুকোচুরি ও পাতা খেলা। 

গ্রামীণ জনপদে মাঠ কিংবা ফসল কাটা শেষে ফাঁকা জমিতে শিশু-কিশোররা এসব খেলাধুলায় মেতে উঠতো। এসব খেলাধুলা আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করতো। ঐতিহ্যবাহী হারিয়ে যাওয়া এসব খেলাধুলা এখন আর তেমন চোখে পড়েনা। গ্রামে খেলার মাঠ কমে যাওয়ায় এসব খেলা এখন শুধুই স্মৃতি। এই সব খেলাগুলোর নামও জানে না নতুন প্রজন্মের অধিকাংশ শিশু-কিশোর। 

ক্রীড়া সংগঠক আব্দুল ওহাব বলেন, প্রাচীন হলেও শিশু-কিশোরদের কাছে এসব খেলা অনেকটাই নতুন। গ্রাম বাংলার খেলাধুলা রক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্রীড়া সংগঠনগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। এজন্য নিয়মিত খেলাগুলোর আয়োজন করতে হবে। 

নীলফামারী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি আবু মুসা মাহামুদুল হক বলেন, এক সময় গ্রামবাংলার শিশু-কিশোরেরা নানারকম গ্রাম্য খেলায় অংশ নিত। এই সমস্ত খেলা শুধু তাদের জন্যেই বিনোদন সৃষ্টি করতো না বরং গ্রামবাসীও এই খেলাধুলায় আনন্দ উপভোগ করতো। বর্তমান সময়ে এই সমস্ত খেলা প্রায় হারিয়ে যাওয়া পথে। গ্রামীণ এই খেলাগুলো রক্ষার্থে ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে।