‘জাল ট্রলারই আমাগো জীবন’

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:৩৫:৩৯ এম

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : চলছে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ জন্য বঙ্গোপসাগরসহ নদ নদী ও উন্মুক্ত জলাশয়ে ২২দিন জাল ফেলা নিষিদ্ধ। ঘাটে অবস্থান করছে মাছ ধরার সকল ট্রলার, নৌকা। মাছ ধরা বন্ধ মানে জেলেদের উপার্জনও বন্ধ। অবসর সময়টা শুয়ে-বসে কাটালেতো আর চুলোয় হাড়ি চড়বে না জেলে পরিবারে। অন্য কোনো কাজও নেই তাদের হাতে। তাই দীর্ঘ সময় অলস না কাটিয়ে জাল মেরামতের কাজে নেমে পড়েছেন শরণখোলার  বেকার জেলেরা।

বুধবার সকাল থেকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রাজৈর, খোন্তাকাটা , জিলবুনিয়াসহ বলেশ্বর পারের কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা জাল মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা যে যার মহাজনদের ট্রলারের জালের পাশপাশি বেশি উপার্জনের আশায় অন্য মহাজনের জালও মেরামত করছেন।

এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আলম তালুকদার বলেন, জাল ট্রলারই আমাগো জীবন। একদিন মাছ না ধরলে সংসার চলে না। ২২ দিন সাগরে যাইতে পারমু না। খামু কি? তাই মাহাজনের জাল মেরামত কইরা সংসার চালাই।

ট্রলার মালিক খোন্তাকাটা গ্রামের মানিক তালুকদার জানান, তার ট্রলার অবরোধের দুইদিন আগে সাগর থেকে ঘাটে ফিরেছে। শেষ ট্রিপে এক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। লাভ হয়নি। তবে খরচ মিটিয়ে সমান সমান আছে। অবরোধ শেষ হলে সাগরে যেতে হবে। এজন্য জাল-ট্রলারে যেখানে যে সমস্যা তা মেরামত করে প্রস্তুত করে রাখছেন। জাল মেরামতের জন্য প্রতিদিন একেক জকনকে ৫০০ টাকা করে দিতে হয়।

মৎস্য আড়তদার মো. হুমায়ুন কবির জানান, এ বছর ইলিশ কম পাওয়ায় শরণখোলার কোনো ব্যবসায়ী লাভের মুখ দেখেনি। মৌসুমও শেষ পর্যায়ে। অবরোধ শেষে আর দু-একটি ইলিশের ট্রিপ হতে পারে। তাতে লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে কি না বলা যায় না।

শরণখোলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা এমএম পারভেজ বলেন, কোনো নিবন্ধিত জেলে মাছ ধরতে গিয়ে যদি মারা যান, তাহলে সেই পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয়। তবে, ট্রলার দুর্ঘটনার শিকার হলে সে ব্যাপারে কোনো সহায়তা দেয়া হয় না। মৎস্য চাষিদের জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো ট্রলার মালিক ব্যাংক ঋণের জন্য প্রত্যয়ন চাইলে আমরা দিয়ে দেবো।