ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ডুমুরিয়াসহ বিলডাকাতিয়ার পানি নিষ্কাশনে শৈলমারী নদীর সাথে কাজিবাছার সংযোগ রেখে খননের দাবীতে এলাকাবাসীর আয়োজনে গতকাল বুধবার দুপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শৈলমারী ১০ ভেন্ট রেগুলেটরের উপর দাঁড়িয়ে পানিবন্দি এলাকার দুই শতাধিক মানুষ এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। খুলনা জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি মজনু শেখের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্যদেন এবং উপস্থিত ছিলেন, ডুমুরিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির বুলু, রংপুর ইউপি চেয়ারম্যান সমরেশ মন্ডল, ওমর আকুঞ্জি, ইউপি সদস্য আব্দুল গফ্ফার, ইউপি সদস্য লুৎফর মোড়ল, বিএনপি নেতা সরোয়ার মোড়ল, প্রশান্ত বিশ্বাস, অমর বিশ্বাস, শিমুল ঢালী, পঞ্চরাম মন্ডল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ৩/৪বছর বিলডাকাতিয়াসহ ডুমুরিয়ার উত্তরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। শৈলমারী নদী পলি ভরাট হওয়ার পর থেকে বৃহত এই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বছরে ৬মাস পানির সাথে বসবাস করতে হচ্ছে লাখো মানুষের। সাগর থেকে জোয়ারে শিবসা নদী হয়ে আসা পলিতে ভরাট হয়ে গেছে এক সময়ের তীব্র খরস্রোতা শৈলমারী নদীটি। বর্তমানে এ নদী খননের জন্য ৪৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রস্তাবিত ওই খনন প্রকল্পে কাজিবাছাকে বাদ দিয়ে শৈলমারী নদীর সাথে শিবসার সংযোগ রাখা হয়েছে। এভাবে নদী খনন হলে খননের বছর না যেতেই পুনরায় পলিতে ভরাট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বক্তারা আরো বলেছেন, সাগর থেকে উঠে আসা কুঙ্গা নদীর জলধারা পূর্বদিকে পশুর নদীতে মিশেছে আর একটি পশ্চিম দিকে শিবসা নদীতে মিশেছে। পূর্বদিকের নদী অর্থাৎ পশুর নদী গঙ্গার জলপ্রবাহের একটি ধারা। এ নদী পদ্মা নদীর একটি শাখা। যে নদীটি কুষ্টিয়ার মধুমতি হয়ে রূপসায় মিশেছে। যে কারণে এ নদীতে পলি জমতে পারছে না। অন্যদিকে শিবসা নদী ক্রমান্বয়ে পলিতে ভরাট হচ্ছে। যে কারণে শৈলমারী নদী খনন করে শিবসার সাথে সংযোগ দিলে খননের বছর না গড়াতেই পুনরায় ভরাট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিবসা নদী পাইকগাছার বিগরদানা চৌমুহনী অর্থাৎ যেখান দিয়ে পানি বের করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে সেই বড় নদীটি বর্তমান পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। তাই এলাকাবাসীর দাবী, বিলডাকাতিয়াসহ ডুমুরিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের পানি শৈলমারী ১০ ভেন্ট রেগুলেটর হয়ে বটিয়াঘাটার কাজিবাছা নদীর সাথে সংযোগ রাখার। এছাড়া কাজিবাছায় একটি ২১ ভেন্টের রেগুলেটর স্থাপনেরও দাবি জানান তারা। অবিলম্বে প্রকল্প সংশোধন করে কাজিবাছাকে প্রাধান্য দিয়ে নদী খননের দাবী জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শৈলমারী নদী খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। তাছাড়া ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর কোন মতামত থাকলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পাউবো কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।