চৌগাছা প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছা পৌরসভার চার বছরের সাধারণ হাট ইজারার বকেয়া এক কোটি ২৪ লাখ টাকা আদায়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। এসব ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায় বিগত সরকারের আমলে চৌগাছায় সাধারণ হাট ইজারা দিতে কোন নিয়ম মানা হতো না। যে কোন একজনের নামে নামমাত্র মুল্যে হাট ইজারা নিয়ে চলতো লুটপাটের মহা উৎসব। এক বছর যার নামে ইজারা নেওয়া হতো পরবর্তী বছর নেওয়া হতো অন্য একজনের নামে। কিন্তু হাট পরিচালনা করতো একই ব্যাক্তি। এভাবেই বছরের পর বছর চলে লুটপাটের প্রতিযোগীতা। জানাযায় বাংলা ১৪২৮ সনে মাত্র ৫৬ লাখ ২৮ হাজার পাঁচশো টাকায় হাট ইজারা নেয় তৎকালীন মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেলের আপন চাচাতো ভাই ইমামুল অর রশিদ টিটো। ইজারার টাকা পরিশোধ করে হাটে যাওয়ার নিয়ম থাকলেও তার কাছে পৌর কর্তৃপক্ষের এখনো পাওনা রয়েছে ২৬ লাখ ৪ হাজার দুইশো টাকা। ১৪২৯ সনে ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় হাট ইজারা নেয় পৌর মেয়র হিমেলের বন্ধু শামীম রেজা। তিনি ইজারা বাবদ মাত্র ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জমা দেন। তার কাছে পৌর কর্তৃপক্ষের এখনো পাওনা আছে ৫৫ লাখ ১২ হাজার টাকা। ১৪৩০ সনে ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকায় হাট ইজারা নেয় পৌর মেয়র হিমেলের বন্ধু আসিফ ইকবাল ভুট্টো। তার কাছ এখনো পৌর কর্তৃপক্ষের পাওনা রয়েছে ৩৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। ১৪৩১ সনে ৮০ লাখ ১৫ হাজার টাকায় হাট ইজারা নেয় পৌর কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা শাহিনুর রহমানের ভাই মিজানুর রহমান। তার কাছে এখনো পৌর কর্তৃপক্ষের পাওনা রয়েছে ৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭’শ ৫০ টাকা। সবমিলিয়ে ১৪২৮, ১৪২৯, ১৪৩০ ও ১৪৩১ বাংলা সনের ইজারার বকেয়া বাবদ চার জন ইজারাদারের কাছে মোট পাওনা আছে এক কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার ৯’শ৫০ টাকা। কিন্তু সরকারের পতনের এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে বকেয়া টাকা আদায়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। যেখানে সাধারণ নাগরিকদের সামান্য পৌর কর আদায়ে নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেখানে কোটি টাকা আদায়ে পৌর কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে নিরাবতা পালন করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন এটা পৌর প্রশাসকের কাজ। আমি নতুন এসেছি কি অবস্থায় আছে জানিনা।
পৌর প্রশাসক ও চৌগাছা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভুমি এবং ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসমিন জাহান বলেন, আমি কেবল আমার সময়টা অর্থাৎ ১৪৩১ সনের বকেয়া আদায়ের জন্য সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেছি। বাকিগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা আমার এখতিয়ারে না, এটা পৌরসভার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বলেত পারবে। এব্যাপারে জানতে চাইলে যশোরের ডিডিএলজি রফিকুল হাসান বলেন,এব্যাপারে আমার কি করার আছে এগুলো তো চৌগাছা পৌরসভার ব্যাপার। তিনি আরো বলেন এসব ব্যাপারে এখন নোট দিয়ে রাখলে পরবর্তী নির্বাচিত মেয়র এসে পদক্ষেপ নিতে পারবে।