আব্দুল মতিন, মণিরামপুর: অবশেষে মণিরামপুরের বিজয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই আলোচিত জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় তদন্তের কার্যক্রম শুরু করেছেন পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) যশোর। আদালতের প্রতিনিধি হিসেবে সোমবার বিজয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরেজমিন তদন্তে আসেন পিবিআইয়ের কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন। এ সময় বাদি-বিবাদীদের ভিন্নভিন্ন ভাবে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন বিজয়রামপুর গ্রামের মৃত. ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে মোঃ ইনছার আলী। তিনি গত ২৬ জানুয়ারী ২০২২ ইং তারিখে অবসরে যান। এরপর ২০২৩ সালের ১০ জুন এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সুনিল কুমার পাইনের ছেলে তাপস কুমার পাইন। জানা গেছে চলতি বছরের ২৩ জুলাই বেতন প্রক্রিয়ার কার্যক্রম করার সময় এলাকাবাসী জানতে পারেন বদরুজ্জামান নামে একজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ সময় কাগজ পত্রে দেখা যায় কথিত এই নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক বদরুজ্জামানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ২০০৪ সালে। এ সময় সাবেক প্রধান শিক্ষক ইনছার আলী এবং তৎসময়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস।
বদরুজ্জামানের বেতন-ভাতা করানোর সময় জানাজানি হলে বিষয়টি নিয়ে গোটা মণিরামপুরে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। ২০ বছর আগে নিয়োগ দেখানো কথিত শিক্ষক বদরুজ্জামানকে কখনোই বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি তাকে দেখেননি। এছাড়া সে সময়ে প্রধান শিক্ষক ইনছার আলীসহ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি বদরুজ্জামানকে নিয়োগ দেননি। বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাপস পাইনের কাছে এলাকাবাসী জানতে চাইলে সঠিক জবাব দিতে পারেনি জনগণকে। ঘটনাটি নিয়ে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠলে মরহুম মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের ছেলে মুফতি আব্দুর রশিদ’সহ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষককের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এক পর্যায়ে সেই দিনে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইন ঝামেলা এড়াতে মেডিকেল ছুটিতে চলে যান। এদিকে ঘটনার ন্যায় বিচার এবং জালিয়াতির হোতা প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার পাইন ও কথিত শিক্ষক বদরুজ্জামানকে অভিযুক্ত করে সাবেক প্রধান শিক্ষক ইনছার আলী বাদি হয়ে ১২/০৮/২০২৫ ইং তারিখে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার পিটিশন নম্বর- ৭৮৮/২৫। আদালত বাদির অভিযোগটি আমলে নিয়ে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) যশোরকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
এ ব্যাপারে বাদি ইনছার আলী, বিবাদী তাপস কুমার পাইন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।