অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগরে ভাটপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বরাদ্দকৃত ‘পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস’ (পিবিজিএসআই) প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর জমা দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ের নামে পিবিজিএসআই কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এর অংশ হিসেবে ২০ শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা করে পৃথক চেক প্রদান করা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর করিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন। পরে শিক্ষার্থীদের হাতে নগদ দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা দেয়া হয়। টাকা কম দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুললে বিভিন্ন খরচের কথা বলে আমাদেরকে চুপ থাকতে বলেন তারা। প্রাপ্য টাকা ফিরে পেতে ও জড়িত প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
৮ম শ্রেণির সুমাইয়া খাতুনের পিতা আলমগীর হোসেন বলেন, পাঁচ হাজার টাকার চেকে স্বাক্ষর করালেও আমার মেয়েকে হাতে দেয়া হয়েছে মাত্র দুই হাজার ৫০০ টাকা। বাকি টাকা আত্মসাত করেছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। কেন তারা শিক্ষার্থীদের পাওনা টাকা আত্মসাত করেছেন তার বিচার হওয়া দরকার। একই শ্রেণির তাহমীনা জামান তিথীর পিতা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়েকে চেকে স্বাক্ষর করালেও হাতে দেয়া হয়েছে মাত্র তিন হাজার টাকা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) অচিন্ত কুমার মন্ডল বলেন, আমার স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার গরিব। ২০ শিক্ষার্থীকে দেয়া টাকা প্রায় ৫০ শিক্ষার্থীর মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। এখানে আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, বিদ্যালয়ের ১৩০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলোচনা করে ২০ জনকে চেক দেয়া হয়েছিল। পরে শিক্ষার্থীরাই টাকা সমন্বয় করেছে। আমাকে নিয়ে একটি অভিভাবক চক্র ষড়যন্ত্র করছে, কারণ আমি ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পিবিজিএসআই’র টাকা ভাগাভাগি করার কোনো সুযোগ নেই। ভাটপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আগামী রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) থেকে তদন্তকাজ শুরু করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল বলেন, শিক্ষার্থীদের দেয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের দায়িত্ব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।