তিনি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ভিজিটিং কার্ডে লেখেন এমডি

এখন সময়: বুধবার, ১৭ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:০৮:০৬ এম

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: কোটচাঁদপুরে অর্থ বাণিজ্যে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় সংক্ষুব্ধ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নারায়ন চন্দ্র পাল রোগীর সামনে ব্যবস্থাপত্র ছুড়ে মারলেন। এ ঘটনায় ক্ষোভের আগুনে পুড়ছেন রোগী ও তার স্বজনরা। নারায়ন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হলেও ভিজিটিং কার্ডে এমডি লিখে প্রচার চালান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই সকালে শহরের বেনেপাড়ার স্কুল শিক্ষক জাকির হোসেনের ছেলে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী (এমএসসি ফিশারীজ) সৌরভ আহমেদ (২৭) দাঁতের সমস্যা নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দন্ত বিভাগে যান। সেখানে রোগী দেখছিলেন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট নারায়ন চন্দ্র পাল। সৌরভ নিয়ম মেনে বহির্বিভাগ থেকে টিকিট কেটে ভিতরে ঢোকেন। তিনি তার দাঁতের রক্তপড়াসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানালে তাকে মুখ থেকে মাস্ক খুলতে নিষেধ করেন। কোনকিছু না দেখেই তিনি তার ব্যবস্থাপত্র দেন। সাথে সাথে তিনি শহরের টিএন্ডটি পাড়ার আমেনা ডেন্টালে গিয়ে মুখ ওয়াশসহ আনুসাঙ্গিক চিকিৎসা নিতে বলেন। কিন্তু সৌরভ ওখানে না গিয়ে পিতার পরিচিত দুধসরা সড়কের মডার্ন ডেন্টালে যান। গত ৩ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সৌরভ পুনরায় নারায়ন চন্দ্র পালের কাছে গেলে মডার্নে মাউথ ওয়াশ করার কথা শুনে তিনি ক্ষেপে যান। একপর্যায়ে কোন চিকিৎসা না দিয়ে আগের ব্যবস্থাপত্রটি তার সামনে ছুড়ে ফেলেন। মর্যাদা হানির আশঙ্ককায় সৌরভ হাসপাতাল ত্যাগ করেন। গত মঙ্গলবার রাতে সৌরভের পিতা জাকির হোসেন মোবাইলে কথিত ডাক্তারের অসদাচরণের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তারপর সাংবাদিকরা হাসপাতালে খবর নিতে শুরু করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের ১০১ কক্ষে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ডেন্টাল (এমটি) নারায়ন চন্দ্র পাল ও সহকারী সার্জন বিউটি রানী বিশ্বাস একই কক্ষে দাঁতের রোগী দেখেন। অভিযোগ রয়েছে এ নারায়ন চন্দ্র পাল হাসপাতালে রোগী এলেই উপস্থিত ব্যবস্থাপত্র দিয়ে চুক্তিবদ্ধ আমেনা ডেন্টাল কেয়ারে রোগী পাঠাচ্ছেন। হাসপাতালে সব রকম ব্যবস্থা থাকার পরও অর্থ বাণিজ্যের স্বার্থে তিনি এমনটি করছেন। তাছাড়া রোগীদের সাথে প্রায়ই অসদাচরণ করারও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী একজন জানান, একই কক্ষের সহকারী সার্জন বিউটি রানী বিশ্বাসকে আপা বলায় তিনি অতিমাত্রায় ক্ষেপে যান। তাছাড়া নারায়ন চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে মারাত্মক প্রতারণার অভিযোগও পাওয়া গেছে। তিনি এমবিবিএস ডাক্তার না হওয়ার পরও তার ভিজিটিং কার্ডে এম.ডি লেখা রয়েছে। রোগীদের আগ্রহী ও নিজের অর্থ বাণিজ্যের প্রসার বাড়াতেই তিনি এ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: ফারুক হোসাইন বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের ডাক্তার লেখার কোনো সুযোগ নেই। সেখানে এম.ডি (মাস্টার্স অব ডক্টর) লেখা বড় রকমের প্রতারণা যদি ভিজিটিং কার্ড তার হয়। এ ব্যাপারে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নারায়ন চন্দ্র পালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার নির্দিষ্ট কোনো চেম্বার নেই। তাছাড়া আমার ভিজিটিং কার্ডও নেই আমি কারো সাথে দুর্ব্যবহার করিনি।