শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : যশোরের শার্শায় হাঁসের ফার্মে শিয়াল ধরতে অবৈধভাবে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখায় স্পৃষ্টে আহাদ আলী (৭২) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শার্শা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী হাঁসের খামারটি ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দেয়।
নিহত আহাদ আলী রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাহাদুর মোড়লের ছেলে। আর খামারের মালিক একই গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে সোহাগ হোসেন ওরফে কালু।
স্থানীয়রা জানান, কালু তার হাঁসের খামারে শিয়াল ধরার জন্য প্রতিদিন বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে রাখতো। সেই বিদ্যুৎ সংযোগের জিআই তার পাশের জমির আইলের উপর দিয়ে ফেলে রাখা ছিল। সকালে জমিতে কাজ করতে গিয়ে ওই তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেন আহাদ আলী।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর হাঁসের খামারের মালিক কালুর পক্ষের লোকজন নিহত আহাদ আলীর একটি ঘরের চাল ভেঙে দিয়েছে এবং কালুর এক আত্মীয় নিজেকে পুলিশের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মামলা না করার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়েছে।
নিহতের পুত্রবধূ জুলেখা বেগম জানান, শ্বশুর সকালে খেয়ে জমিতে কাজ করতে যান। খামারে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখার বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই গ্রামবাসী খামার মালিক কালুকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সে শোনেনি। নিষেধ করার পরও তিনি বৈদ্যুতিক ফাঁদ বন্ধ না করায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কালুর চাচাতো ভাই জুয়েল বাড়িতে এসে নিজেকে পুলিশের বড় গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মামলা না করার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। তার স্বামীসহ তিন দেবর বিদেশে থাকায় তাদের পরিবারটি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল জানান, তিনি পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কিছুদিন ডিবিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি নিহতের পরিবারকে হুমকি দেননি, এ অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
গ্রামবাসীরা জানায়, এর আগে কালুর হাঁসের খামারের ফাঁদে একটি গরু, একটি কুকুর ও একটি শিয়ালের মৃত্যু হয়েছিল। এনিয়ে তাকে বারবার নিষেধ করার পরও তিনি বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখায় আজ এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।