অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া থেকে সরকারি গুদামে পাঠানোর কথা থাকলেও প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ টাকার মূল্যের ৭ হাজার ১৪০ বস্তা ইউরিয়া সার চুরি হয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রশাসন ৩ হাজার ২০০ বস্তা সার উদ্ধার করলেও; এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৪ হাজার বস্তা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মেসার্স সামিট অ্যাসোসিয়েটস নামক একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইউরিয়া সার পরিবহনের দায়িত্বে ছিল মেসার্স নভো ট্রেড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান মিল্টন অভয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্ত চারজন হলেন, ট্রাক বন্দোবস্তকারী মিলন হোসেন (৪৫), আবু বক্কার (৩৪), রমজান আলী (৩০) ও উজ্জ্বল সাহা (৩৫)। এর মধ্যে মিলন ও উজ্জলকে আটক করা হলেও রমজান ও আবু বক্কার এখনও পলাতক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মামলার অন্যতম আসামি রমজান আলী এখনো প্রকাশ্যে ঘুরলেও প্রশাসন তাকে ধরতে পারছে না। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫টি ট্রাকে এসব সার ফরিদপুরের টেপাখোলা বাফার গোডাউনে পাঠানোর কথা ছিল। তবে সেখানে না পৌঁছে সারগুলো গোপনে বাজারে বিক্রি করে আত্মসাৎ করা হয়। এ ঘটনায় আরও অভিযোগ উঠেছে, চক্রটি তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ও বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছে। এমনকি নভো ট্রান্সপোর্ট নিয়োগকৃত দালালদের নিকট থেকে ২৫ লাখ টাকা গ্রহণের কথাও স্বীকার করেছেন বাদী মিল্টন। ঘটনার আরও জটিলতা দেখা দেয়, তখন অভিযুক্ত মিলন হোসেন পালটা অভিযোগে তার সহযোগী রমজান আলির বিরুদ্ধে ২ হাজার ১৪০ বস্তা সার আত্মসাতের দায় চাপান। এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয় দোষারোপ ও বিভ্রান্তি।
অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত রমজানকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে মিলন ও তার ঘনিষ্ঠ মহল। এ ছাড়া, আবু বক্কার নামের এক সহযোগীকে খুলনায় নিয়ে মারধর করে ৩ লাখ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর এবং সাদা চেক নেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আবু বক্কার জানান, ‘আমি মিলনের সাথে সরল বিশ্বাসে কাজ করতাম। জানতাম না এমনভাবে আমাকে ফাঁসাবে। এখন দিশেহারা হয়ে গেছি।,
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি কিন্তু এই চক্র এত বড় যে, এদের কোথা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছিনা। তবে মামলা হয়েছে এবং দুইজন আটক হয়েছে। সব খবর বের হবে। সার নিয়ে কোন কেলেঙ্কারি সরকার সহ্য করবেনা।’
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল বলেন, ‘সার নিয়ে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে এই মোকাম ও সরকারের ক্ষতি করছে একটি চক্র। তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে দ্রুত সকলকে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।