অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি: অভয়নগরে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে শতকোটি টাকায় নির্মিত ভৈরব সেতু। রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির না থাকায় চুরি হচ্ছে মালামাল। সেতুতে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ১৬ মাস ধরে। এতে বেড়েছে চুরি-ছিনতাইসহ ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জনবল সংকট ও বরাদ্দ না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণসহ তদারকি করতে পারছে না উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় (এলজিইডি)। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ হলে তবেই সেতুর দায়িত্ব নিতে পারে নওয়াপাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভৈরব সেতুর সড়ক বাতির সবকটি বন্ধ রয়েছে। অসংখ্য বাতি ও সেতুর গুরুত্বপূর্ণ স্থানের যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। কিছু কিছু স্থানে বৈদ্যুতিক তার কেটে ফেলা হয়েছে। নেই কোনো নিরাপত্তাকর্মী। অন্ধকারে টর্চ জ্বালিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার ভাঙাগেট মশরহাটী গ্রামের সঙ্গে শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দেয়াপাড়া গ্রামকে যুক্ত করেছে ভৈরব সেতু। ১৬ পায়ার (পিলার) বিশিষ্ট ৭০২.৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। সেতুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রয়েছে ৬০ সড়ক বাতি। উপজেলার শ্রীধরপুর, বাঘুটিয়া, শুভরাড়া ও সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের সঙ্গে প্রেমবাগ, সুন্দলী, চলিশিয়া ও পায়রা ইউনিয়নসহ নওয়াপাড়া পৌর এলাকার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই ভৈরব সেতু। তাই নির্মাণের পর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি করা হলেও গত এক বছর ধরে অযত্ন-অবহেলায় সেতুর নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিভিন্ন যানবাহন চালকদের অভিযোগ, ভৈরব সেতুর কারণে অভয়নগর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত যাতায়াত করা সম্ভব হয়। তবে সন্ধ্যার পর অন্ধকার পরিবেশে সেতুর ওপরে উঠতে ভয় করে। যানবাহন থামিয়ে ছিনতাই ও সেতুর বিভিন্ন মালামাল চুরি ঘটনা চোখে পড়লেও কিছু করার থাকে না। কারণ, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, নওয়াপাড়ার জোনাল অফিসের এজিএম (কম) মেহেদুল ইসলাম মেহেদি বলেন, ‘২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ১৬ মাসে ভৈরব সেতুর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ২ লাখ ৮২ হাজার ৬৯৪ টাকা। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি, মিটার পুড়ে যাওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভার সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভৈরব সেতুর বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা চলছে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ হলে তবেই পৌর কর্তৃপক্ষ ভৈরব সেতুর দায়িত্ব নিতে পারে।’