শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতি এবং ‘শাটডাউনসহ’ সব ধরনের আন্দোলন প্রত্যাহারের পর বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানিসহ সকল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে গোটা বন্দর এলাকায়। স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ী মহলে। সোমবার সকাল থেকেই বন্দর ও কাস্টমস কার্যক্রম পুরোদমে চালু হয়।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে সকাল থেকে বন্দর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দুইদিন বন্ধ থাকার পর কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পণ্য শুল্কায়ন ও খালাসে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পরিস্থিতি সম্পর্কে বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আমিনুল হক আনু বলেন, “মার্চ টু এনবিআর” কর্মসূচির আওতায় ২৮ ও ২৯ জুন দুই দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ছিল না। তবে রোববার রাতে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণার পর সোমবার সকাল থেকেই কর্মীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরেছে। রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত ২৩৫টি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে এবং ১২০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল থেকে ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
রোববার (২৯ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) কার্যালয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর।
এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত সপ্তাহের প্রথম দিকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কলমবিরতি পালন করেন। পরে গত শনিবার থেকে ‘সম্পূর্ণ শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করলে দেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে চরম অচলাবস্থা দেখা দেয়। এর ফলে বেনাপোলসহ সব স্থলবন্দরে শুল্ক আদায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পণ্য খালাস স্থবির হয়ে পড়ে, যা রাজস্ব ঘাটতির পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
এই অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানানো হয়। সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এনবিআরের কাঠামোগত সংস্কার, পদোন্নতি, নিরপেক্ষতা ও মর্যাদা সংরক্ষণের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিল।