যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল

ক্যাশ কাউন্টারে একদিনে লক্ষাধিক টাকা আয়ের রেকর্ড

এখন সময়: শনিবার, ১ জুন , ২০২৪, ০১:৪১:১৬ এম

বিল্লাল হোসেন : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টারে রাজস্ব আয় বেড়েছে। একদিনে ১ লাখ ৩ হাজার ২২০ টাকা আয়ের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ক্যাশ কাউন্টার স্থাপন ও দায়িত্বরতদের সততা-নিষ্ঠার কারণে রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি ক্যাশ কাউন্টার চালু করার অনুমোদন মেলে। তিনি ক্যাশ কাউন্টারে কার্যক্রম চালুর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে দুটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার মেশিন কিনে দেন। কিন্তু ১৫ জানুয়ারি তার কর্মজীবন শেষ হওয়ায় পূর্নাঙ্গভাবে কার্যক্রম চালু করতে ব্যর্থ হন। পরে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ সাহা। কিন্তু তিনি চেষ্টা করেও ক্যাশ কাউন্টার চালু করতে পারেননি।
সূত্রটি আরও জানায়, ২০১৮ সালের ৭ এপ্রিল ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্যাশ কাউন্টার চালুর জন্য জোরালো ভূমিকা নেন। ২০১৯ সালের ৫ জুলাই হাসপাতালের সেন্ট্রাল ক্যাশ কাউন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ওই সময়ের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্য। এরপর হাসপাতালের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার টাকা ক্যাশ কাউন্টারের মাধ্যমে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন কর্তৃপক্ষ। তারপরেও গোপনে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়াই করা হতো।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার বিশ্বাস আর্থিক স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করেও সফল হননি। ২০২১ সালের ১২ মে তিনি চাকরি থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর গ্রহণ করেন। ওই বছরের ১ জুন তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। তিনি যোগদানের পর থেকেই আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ক্যাশ কাউন্টারের রশিদের মাধ্যমে করার নির্দেশনা জারি করেন। তার জোরালো তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা করার কারণে আর্থিক দূর্নীতি কমতে শুরু করে। একই সাথে বাড়তে থাকে সরকারের রাজস্ব আদায়। একই ধারাবাহিতা ধরে রাখতে সক্ষম হন বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ। বর্তমানে ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া সিটিস্ক্যান, এক্সরে, আল্ট্রাসনো ও ইসিজিসহ কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়না। ফলে নগদ টাকা গ্রহণের দিন শেষ হয়েছে। যে কারণে মাসে মাসে ক্যাশ কাউন্টারে রাজস্ব আয় বেড়ে চলেছে।
এই বিষয়ে হাসপাতাল ক্যাশ কাউন্টারের ইনচার্জ ইস্রাফিল হোসেন জানান, ২০২১ সালের ১ জুলাই ক্যাশ কাউন্টারে একদিনে রাজস্ব আয় হয়েছিলো মাত্র ৮ হাজার ৪২০ টাকা। বর্তমানে একদিনে আয় লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। তিনি জানান, গত ১৩ মে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ২২০ টাকা। এটা দায়িত্বরতদের আন্তরিকতার কারণে সম্ভব হয়েছে। এই পর্যন্ত মোট রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, তিনি যোগদানের পর হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে আর্থিকসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করা হয়েছে। ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করার নির্দেশ দেন। সঠিকভাবে তদারকি করার কারণে হাসপাতালের রাজস্ব আয় বেড়েছে। আগামীতে রাজস্ব আরও বাড়বে বলে আশাবাদী।