মণিরামপুরে বোরো ধান লুটের অভিযোগ

এখন সময়: বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৩৫:৩৮ এম

নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর : মণিরামপুরে রহিম গংয়ের বিরুদ্ধে বোরো ধান লুটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার মণিরামপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন মণিরামপুরের শেখ পাড়া খানপুর গ্রামের মৃত মুক্তার গাজীর স্ত্রী বৃদ্ধা জরিনা বেগম। রহিমের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে জরিনা বেগম (৭০) ছেলে হাফেজ নজরুল ইসলাম, মেয়ে মেরিনা খাতুন, আমেনা খাতুনসহ স্বজনদের নিয়ে প্রেসক্লাবে হাজির হন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের ছেলে হাফেজ রেজাউল ইসলাম বলেন, ১৫৭ নম্বর খানপুর মৌজার ১৯৭৬ খতিয়ানে ৬৯০২ ও ৬৯০০ দাগে ৬৪ শতক জমিতে বোরো ধান চাষ করেন। এ জমি নিজের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এবং বোন ফুফাদের অংশ থেকে ক্রয়কৃত। বড় ভাই রেজাউল ইসলাম বিভিন্নভাবে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে মেঝ ভাই হাফেজ নজরুল ইসলামের এই জমি দখল করেন। চলতি বোরো মৌসুমে হাফেজ নজরুল ইসলাম নিজেই এ দু দাগে ৬৪শতক জমিতে বোরো ধান চাষ করে। যথারীতি গত ঈদের আগে ধান কাটা হয়। এরপর বাধে বিপত্তি। বড় ভাই রেজাউল ইসলাম ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে বাড়িতে ধান তুলতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে জীবন সংশয়ের মধ্যে পড়েন হাফেজ নজরুল ইসলাম। অবশেষে মণিরামপুর থানায় বিষয়টি দুদফায় লিখিতভাবে জানান।

নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরও পুলিশের কোন সহযোগিতা পায়নি। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং ধান লুটকারীদের জমিতেই হাতেনাতে ধরেন। কিন্তু পুলিশের ভূমিকা বেশিক্ষণ থাকেনি। পরবর্তীতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার মধ্যে ৬৪ শতক জমির মধ্যে ৪০ শতক বোরো ধান জমি থেকে রহিমের লোকজন তুলে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকেসহ পরিবারের লোকজনদেরকে খুন করার হুমকি দেয়। এরপরও রক্ষা হয়নি, রহিম ও তার লোকজন হাফেজ নজরুল ইসলামকে জানিয়েছে. এ জমি তার বড় ভাই রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। অবশ্য নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, থানা পুলিশ আমাকে কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলেন। যথারীতি হাজির হয়ে জমির সমুদয় কাগজপত্র দেখে শুনে আমার জমি তা প্রমাণ করাতে সক্ষম হয়েছি। তারপরও পুলিশ আমাকে কোন প্রকার সহযোগিতা করেনি। এএসআই আব্দুর রহমান এবং সরজিত বিশ^াস আমার অভিযোগের দায়িত্ব পেয়ে উল্টো কাজ করেছে রহিম বাহিনীর পক্ষে। তারপরও আশা নিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা গোয়েন্দা সংস্থা দপ্তরে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছি। তারপরও সমাধান না হওয়ায় জমিতে অল্প কিছু ধান রয়েছে যা রোদ বৃষ্টিতে সমুদয় নষ্ট হওয়ার পথে। এ কারণে নিরূপায় হয়ে সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতার দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম আরো জানিয়েছে, বড় ভাই রেজাউল ইসলাম এ জমি নিয়ে গত ৬/৭বছর অহেতুক হয়রানি করে চলেছে। এ নিয়ে পৃথক দুটি মামলাও করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মা জরিনা বেগম ছাড়াও মেয়ে মেরিনা, আমেনা, রহিম বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে সাংবাদিকদের কাছে আকুতি জানান। এ সময় তাদের ফুফা আবু মুছাসহ গ্রামের অন্যান্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, আব্দুর রহিম মাছনা গ্রামের শহর আলীর ছেলে। সে একাধিক মামলার আসামি বলেও জানাগেছে।