মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আজ

এখন সময়: বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:৫২:০৭ এম

শাহীন আলম তুহিন, মাগুরা  : আজ শনিবার  (১৪ মে) মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রব ও  ব্যাপক সৎসাহ উদ্দিপনা দেখা দিয়েছে। সম্মেলন সফল করতে জেলা আওয়ামী লীগসহ প্রতিটি অঙ্গ সংগঠন ইতিমধ্যে জেলা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গণসংযোগ ও সভা সমাবেশসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চাঞ্চল্যে লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি দীর্ঘদিন দলের কার্যক্রম থেকে দূরে থাকা নেতাকর্মীরাও অনেকটা সরব হয়ে উঠেছে। 
শনিবার সকাল ১০ টায় স্থানীয় নোমানী ময়দানে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, সড়ক-যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সভাপতিত্ব করবেন মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহ্। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মো.সাইফ্জ্জুামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদারসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃৃন্দ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজ্জাম্মেল হক। পরে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ। এ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডাক্তার সিরাজুল আকবর এমপিকে সভাপতি ও পঙ্কজ কুমার কুন্ডুকে সাধারণ সম্পাদক মনোনিত হন। ওই বছরের ৯ মার্চ নব-নির্বাচিত সভাপতি প্রফেসর ডাক্তার সিরাজুল আকবর মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তানজেল হোসেন খানকে কেন্দ্র থেকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি তানজেল হোসেন খানের মৃত্যু হলে সভাপতি পদটি আবারও শূন্য হয়। পরবর্তীতে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহ্কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই থেকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন আব্দুল ফাত্তাহ্ ও পঙ্কজ কুন্ডু। এ বারের সম্মেলনে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি অনেক নতুন মুখ কমিটিতে আসতে পারে বলে দলীয় নেতাকর্মীরা ধারনা করছে। তবে প্রবীণদের মধ্যে নতুন কাউকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে মেধা ও রাজনৈতিক যোগ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে সমানভাবে। 
নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয় নিয়ে নানামুখি আলোচনা চলছে নেতাকর্মীদের মাঝে। সভাপতি পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন প্রবীণ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহসভাপতি মুন্সী রেজাউল হক, সহসভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু ও সহসভাপতি জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শরিফুল ইসলাম,জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিক্জ্জুামান বাচ্চু। পাশপাশি সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক নতুন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দিতার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্পাদক পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুল, প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাখারুল ইসলাম শাকিল, সাবেক ছাত্রনেতা ওহিদুর রহমান টিপু। সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি সভাপতি পদে বেশ ক’জন জ্যেষ্ঠ নেতা তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।  
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম বাবুল ফকির বলেন, আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখে জেলা কমিটি গঠিত হতে হবে। যারা নেতা নির্বাচিত হবেন তাদের সব কিছুর উর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে। সাবেক স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা বর্তমান প্রবাসী বসির আহমেদ জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগের প্রথম সারিতে হাইব্রিড চলে এসেছে। আমি মনে করি আগামী কাউন্সিলে এমন নেতৃত্বে আসবে যারা পুরানো আওয়ামী লীগারদের সামনের সারিতে নিয়ে আসবে। পাশাপাশি নতুনদেরও সাথে রাখবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক পংকজ কুণ্ডু বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য দলের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকলেও মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত দলের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। বিশেষ করে জেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ একটি  ঐক্যবন্ধ সংগঠনে পরিণত হয়েছে।  
মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর বলেন,‘আমি মনে করি আগামী ১৪ তারিখের সম্মেলন দৃষ্টান্তমূলক সম্মেলন হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে। একটি সফল সম্মেলনের মধ্যদিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলা গড়ার কারিগর বের হয়ে আসবে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের আন্দোলন সংগ্রামকে মোকাবেলা করে অতীতের নেতৃত্বের ন্যায় সমগ্র জেলার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দুটি নির্বাচনী আসন ধরে রাখতে পারবে। এছাড়া দলকে আরো গতিশীল করে তুলবে, এমন নেতৃত্ব আসবে বলে আমি মনে করি’।