পানিতে ভিজে ধানে কল গজাচ্ছে, হতাশ কৃষক

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:০৭:৩৮ পিএম

এম আলমগীর, ঝিকরগাছা: টানা কয়েকদিন ভিজে ধানে রোদ না পেয়ে অঙ্কুরিত (কল গজাতে) শুরু করেছে। ফলে কৃষকের সকল শ্রম ও চেষ্টা বিফলে যেতে বসেছে। এতে করে মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে কৃষকদের। ফলে কৃষকের মাঝে এখন বিরাজ করছে চরম হতাশা ও দুঃশ্চিন্তা।

রমজান শেষে ঈদের দিন থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মাঝখানে কয়েকদিন বৃষ্টি বন্ধ ও রোদ থাকার কারণে অধিকাংশ কৃষক ধান কাটে। এর মধ্যে গত সোমবার থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়। এতে করে মাঠে কৃষকের কাটা ধান ভিজে যায়। টানা চারদিন হালকা, মাঝারি ও ভারি বর্ষণে কৃষকের সোনালী ধান পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে কৃষক। ধান বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করে উচু জায়গায় ধান নিয়ে আসে। কিন্তু রোদ না হওয়ায় ধান অঙ্কুরিত (কল গজাতে) শুরু করেছে। ধান অঙ্কুরিত হওয়ার কারণে কৃষক মারাত্মকভাবে ক্ষতির মধ্যে পড়েছে।

উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, কানাইরালী, সোনাকুড়, দিঘড়ী, শিওরদাহ, সাদিপুর, বল্লা, হাজিরবাগ গ্রামের মাঠ ঘুরে সব একই চিত্র দেখা যায়। রাস্তা আর উচু জায়গা জুড়ে কৃষকের ধান স্থান পেয়েছে। কিন্তু রোদ না হওয়ায় সব ধান অঙ্কুরিত হয়েছে। এই ধানে কৃষক নায্য মূল্য পাবে না এবং খাওয়ার জন্য ভাল চালও তৈরি করতে পারবে না।

কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের দেড় বিঘা, হাফিজা বেগমের ১২ কাঠা, ইজাজুল হকের দুই বিঘা, আব্দুস সাত্তারের দেড় বিঘা, সাইফুল ইসলাম বিল্লুর এক বিঘা, আক্তারুল ইসলামের ৫ বিঘা, সালিম হোসেনের ৬ বিঘা, মুরাদ হোসেনের ৩ বিঘা, মুকুল হোসেনের ২ বিঘা, মাস্টার মনিরুজ্জামান মিন্টুর ১৮ কাঠা, হাসানুর রহমানের ৫ বিঘা, আবু বক্কর ছিদ্দিকের ৫ বিঘা, আনারুল ইসলামের ২৪ কাঠা, মুজিবর রহমানের ২ বিঘা, মন্টু মিয়ার দেড় বিঘা, মিলন হোসেনের ২ বিঘা, গাজী গোলাম মোস্তফার ১০ কাটা জমির ধানে অঙ্কুরিত হয়ে গেছে।

মাস্টার মনিরুজ্জামান মিন্টু জানায়, খুব কষ্ট করে পানি থেকে ধান ডাঙ্গায় তুলেছি কিন্তু ধান বাড়ি নিতে পারলাম না। বৃষ্টির কারণে ধান শুকায়নি ফলে ধানে গাছ বেরিয়ে গেছে। ধান এখন গরুর খাওয়ানো ছাড়া কিছুই হবে না।

কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় ৮০ ভাগ কৃষকের ধান ভিজেছে। শুকাতে না পেরে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বিচালী ও ধান সবই হারালো কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, আবহাওয়া এখনও ঝুকির মধ্যে আছে। প্রথমে কৃষককে দ্রুত ধান কাটার কথা বলেছিলাম কিন্ত বিচালীর জন্য তখন ধান কাটেনি। এখন বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। আমরা ধান কাটতে নিষেধ করেছি। আর যারা ধান কেটেছে তাদেরকে কাটা ধানে স্প্রে দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি যাতে ধান অঙ্কুরিত না হয়। তিনি আরো জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগে কারও হাত নেই। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাহায্যের চেষ্টা করব কিন্তু সেটা সংখ্যায় বেশি হলে কি হবে তা বলতে পারবো না।