সাবেক স্বামীর দেয়া আগুনে প্রাণ গেল সাতক্ষীরার গৃহবধূ তামান্নার

শাকিলা ইসলাম জুঁই, সাতক্ষীরা  : এক সময়ের স্ত্রী তামান্না এখন অন্যের গৃহবধু। তাই সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে মালেশিয়া প্রবাসী সাদ্দাম। স্ত্রীকে হত্যা ও নিজের আত্মহুতির জন্য বেছে নেয় ভয়াবহ পথ, আগুন। নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়, তারপর জলন্ত অবস্থায় জড়িয়ে ধরে সাবেক স্ত্রী তামান্না ও তার বর্তমান স্বামী ফরহাদকে। ঝলসে যায় তিনটি প্রাণ। প্রত্যেককে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে। ৫ মে রাতের সেই নিষ্ঠুর ঘটনার নির্মম শিকার তামান্না ৯ মে রাতে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। সিনেমাকে হার মানানো এ ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার বড় কাশিপুর গ্রামে।

সোমবার (৯ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তামান্নার মৃত্যু হয়। গৃহবধূ তামান্না খাতুন পাটকেলঘাটা থানার বড় কাশিপুর গ্রামের শেখ আব্দুল হকের মেয়ে ও সাতক্ষীরা সদররে ফরহাদ সরদারের স্ত্রী। গত ৫ মে সন্ধ্যায় বাড়ির পেছনে কপোতাক্ষ নদীর পাড়ে বর্তমান স্বামীর সাথে বসা ছিলেন তামান্না।  এ সময় পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় সাবেক স্বামী সাদ্দাম হোসেন। এরপর থেকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই গৃহবধু। ঘটনার পরপরি গৃহবধূর বাড়ির পাশ থেকে মামলার আসামী শেখ তুহিন হোসেন ও এবং  প্রধান আসামি সাদ্দাম হোসেনকে রাজধানীর বার্ন ইউনিট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় গৃহবধূর বাবা আব্দুল হক পাটকেলঘাটা থানায় সাবেক স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী সাদ্দাম হাসেনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। প্রধান অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন কলারোয়া উপজেলার তুলসিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তামান্না খাতুনের মামা সাতক্ষীরা সদরের বাসিন্দা গোলাম সরোয়ার জানান, তামান্না চিকিৎসাধীর অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা গেছেন। আমরা নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে বিচার চাই।

পাটকেলঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় জানান, গৃহবধূকে পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ মামলার  প্রধান আসামি সাবেক স্বামী সাদ্দাম হোসেনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত সাবেক স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী সাদ্দাম হোসেন নিজের গায়েও পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে একসঙ্গে মরবেন বলে তরুণীকে জড়িয়ে ধরে। তখন তিনজনই কমবেশী দগ্ধ হন। এ মামলায় অপর  আসামি পাটকেলঘাটার বড় কাশিপুর গ্রামের শেখ আব্দুল আলালের ছেলে শেখ তুহিন হোসেনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহত গৃহবধূর বর্তমান স্বামী ফরহাদ হোসেনও দগ্ধ অবস্থায় ওই বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। এ মামলায় বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।